সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের ফজিলত । The virtues of the last three verses of Surah Hashar

 

অধ্যায় ২: সুরা হাশর

সুরা হাশর পবিত্র কোরআনের ৫৯তম সুরা, যা মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে। এতে মোট ৩ রুকু এবং ২৪ আয়াত রয়েছে। এই সুরায় ইহুদিদের নির্বাসনের ঘটনাটি উল্লেখিত হয়েছে।

মদিনা থেকে দুই মাইল দূরে বনু নাজিরের সম্প্রদায় বসবাস করত। তারা নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে আবদ্ধ ছিল। একদিন নবী (সা.) তাদের মহল্লায় গেলে তারা তাঁকে একটি ছাদের নিচে বসতে দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে ছাদ থেকে পাথর গড়িয়ে তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। আল্লাহ তাআলা ওহির মাধ্যমে নবীকে এ বিষয়ে জানালে তিনি সেখান থেকে চলে যান এবং তাদের জানান, “তোমরা চুক্তি ভঙ্গ করেছ। ১০ দিন সময় পাচ্ছো, এরপর যদি কাউকে পাওয়া যায়, তবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।”

সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত

উচ্চারণ:
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ، عَلِيمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ، هُوَ الرَّحْمَـٰنُ الرَّحِيمُ۔
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلاَمُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ۔
سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ۔
هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ، لَهُ الأَسْمَاءُ الْحُسْنَىٰ۔
يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ؛ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ۔

সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের বাংলা উচ্চারণ

উচ্চারণ : হুআল্লা হুল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়া, আলিমুল গাইবী ওয়াশ শাহাদাদি, হুয়ার রাহমানুর রাহিম। হুআল্লা হুল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল মালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল মু’মিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। ছুবহানাল্লাহি আম্মা য়ুশরিকুন। হুআল্লাহুল খালিকুল বা-রিউল মুছাওয়িরু লাহুল আসমাউল হুসনা। ইউছাব্বিহু লাহু মা ফিস-সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্; ওয়া হুয়াল আজিজুল হাকিম

অর্থ:

তিনি আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্যের সম্যক জ্ঞাতা। তিনি পরম করুণাময়, পরম দয়াময়। তিনিই আল্লাহ, তিনিই মালিক, তিনিই পবিত্র, শান্তির রক্ষক, তিনিই গর্বিত, তিনিই প্রবল। যাকে তারা শরিক করে, আল্লাহ তার থেকে পবিত্র। তিনিই সৃষ্টিকর্তা, উদ্ভাবক, রূপদাতা; সব সুন্দর নাম তাঁরই। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, তা তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, জ্ঞানী।

ঘটনাবলি

মুনাফিকদের প্ররোচনায় বনু নাজিররা দেশ ত্যাগ করতে অস্বীকার করেছিল। নবী করিম (সা.) চতুর্থ হিজরির রবিউল আউয়াল মাসে তাদের পাড়া ঘেরাও করেন। পরে তারা বাধ্য হয়ে নতিস্বীকার করলে নবী (সা.) তাদের নতুন সুযোগ দেন: “অস্ত্র ছাড়া যতটা সম্ভব জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে এলাকা ত্যাগ করো।” আদেশ মেনে তারা দেশত্যাগ করে, কেউ খাইবার উপত্যকায়, কেউ সিরিয়ায় চলে যায়।

রাসুল (সা.) বলেছেন: যে ব্যক্তি সকালে সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তার জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা নিযুক্ত করবেন, যারা তার জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত মাগফিরাতের দোয়া করবে। এবং যদি এই সময়ের মধ্যে লোকটি মারা যায়, তবে সে শহীদের মর্যাদা লাভ করবে। একইভাবে, সন্ধ্যার সময় এটি পড়লে তারও একই মর্যাদা রয়েছে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩০৯০)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url