সুলায়মান (আ.) ও হুদহুদ পাখির গল্প । The story of Sulaiman (a.s.) and Hudhud bird

 

হজরত সুলায়মান (আ.) এবং হুদহুদ পাখি

একবার হজরত সুলায়মান (আ.)-এর দরবারে সব পাখি একত্রিত হলো। পাখিরা হজরত সুলায়মান (আ.)-কে তাদের পরিবার হিসেবে গণ্য করে। তারা সবাই নিজের বিশেষ দক্ষতা ও গোপন শিল্পের কথা জানাতে লাগল, প্রত্যেক পাখি সঙ্গী হওয়ার আশায় অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে তাদের গুণগুলো উপস্থাপন করছিল।

সব পাখির মধ্যে শেষ হিসেবে এল হুদহুদ পাখির পালা। হুদহুদ পাখি হজরত সুলায়মান (আ.)-কে বলল, "যুদ্ধের সময় থেকেই আমি আপনার পাশে থাকতে চাই। আমার এমন একটি জ্ঞান আছে যা অন্য পাখির নেই।"

হজরত সুলায়মান (আ.) জানতে চাইলেন, “তোমার সেই শিল্পটি কী?”

হুদহুদ বলল, "আমি যখন আকাশে উড়ে বেড়াই, তখন পৃথিবীতে পানির স্থানগুলো দেখতে পাই, এমনকি মাটির গভীরে থাকা পানি আমার দৃষ্টি থেকে অদৃশ্য হয় না। আমি এর গভীরতা মাপতে এবং উৎস খুঁজে বের করতে পারি। তাই যুদ্ধের সময় আমি আপনার সঙ্গে থাকতে চাই।"

হজরত সুলায়মান (আ.) খুশি হয়ে বললেন, “তুমি আমাদের জন্য একজন ভালো বন্ধু। আমরা মরুভূমিতে অবস্থানকালে তুমি আমাদের সাহায্য করবে।”

হজরত সুলায়মান (আ.)-এর এই কথায় কাক ঈর্ষান্বিত হয়ে বলল, "হে নবী, হুদহুদ পাখিটি মিথ্যা কথা বলছে। সে আকাশ থেকে পানি দেখতে পায়, কিন্তু মাটির নিচে তার ফাঁদ দেখতে পারে না। তাহলে কেন সে ফাঁদে আটকে পড়ে?"

হজরত সুলায়মান (আ.) হুদহুদকে প্রশ্ন করলেন, "হে পাখি, কাকের কথা কি সত্য?"

হুদহুদ উত্তর দিল, "হুজুর, দয়া করে শত্রুর কথায় কান দেবেন না। আমি যা বলেছি, তা মিথ্যা হলে আমাকে হত্যা করুন। কাক যা বলেছে, তা মহান আল্লাহর আদেশকে অস্বীকার করছে। নিয়তির সিদ্ধান্তে আমি ফাঁদ দেখতে পারি না; এটা পানির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। যখন ঐশী বিচার আসে, তখন জ্ঞান ও যুক্তি কার্যকর হয় না।"

মাওলানা রুমি বলেন, “চুন কাযা অইয়াদ শাভাদ, দনেশ বেখাব-মাহ সিয়াহ গারদাদ বেগিরাদ আফতাব।” অর্থাৎ যখন ভাগ্যলিপি আসে, তখন জ্ঞান ঘুমিয়ে পড়ে, চাঁদ অন্ধকারে ঢেকে যায়, এবং সূর্যে গ্রহণ লাগে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url