মরিচের পাতা কোকড়ানো রোগ ও এর প্রতিকার করুন ।
মরিচের পাতা কোকড়ানো রোগ সাধারণত ভাইরাসজনিত কারণে হয়ে থাকে, যা মূলত সাদা মাছি ও জাবপোকা নামক পোকা দ্বারা ছড়ায়। এই রোগের কারণে গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে ফলনও কমে যায়।
মরিচের পাতা কোকড়ানো রোগের লক্ষণসমূহ:
- গাছের পাতার রং হালকা বা হলুদ হয়ে যায়।
- পাতা কুঁকড়ে যায় এবং আকারে ছোট হয়ে যায়।
- গাছের শাখা-প্রশাখা কম গজায়।
- ফুল ও ফল ঝরে পড়ে।
- গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ফলন কমে যায়।
মরিচের পাতা কোকড়ানো রোগের কারণ:
- ভাইরাস সংক্রমণ: ভাইরাসের কারণে এ রোগটি ঘটে থাকে।
- সাদা মাছি ও জাবপোকা: এসব পোকা ভাইরাস ছড়ায় এবং গাছের পুষ্টি শুষে নেয়।
- আবহাওয়ার পরিবর্তন: অতিরিক্ত তাপমাত্রা বা অনিয়মিত সেচ ব্যবস্থা রোগ বৃদ্ধির সহায়ক হতে পারে।
প্রতিকারের উপায়:
পোকা নিয়ন্ত্রণ:
- সাদা মাছি ও জাবপোকা নিয়ন্ত্রণে কীটনাশক ব্যবহার: নির্দিষ্ট কীটনাশক যেমন ইমিডাক্লোপ্রিড, অ্যাসেটামিপ্রিড, বা থায়ামেথক্সাম ব্যবহার করে পোকা দমন করা যেতে পারে।
- প্রাকৃতিক নিয়ন্ত্রণ: পরিবেশবান্ধব উপায়ে যেমন হলুদ আঠালো ফাঁদ ব্যবহার করা যেতে পারে যা সাদা মাছি আকৃষ্ট করে। এছাড়া নিম তেল ব্যবহার করে পোকা দমন করা যায়।
পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ:
- আক্রান্ত গাছগুলো সরিয়ে ফেলুন এবং ধ্বংস করুন যেন রোগ ছড়াতে না পারে।
- বীজ বপনের আগে মাঠ বা জমিকে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
নিরাপদ সেচ ব্যবস্থা:
- পর্যাপ্ত ও সঠিক পরিমাণে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।
- অতিরিক্ত পানি জমতে দেওয়া যাবে না।
প্রতিরোধী জাত নির্বাচন:
- রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করা যেতে পারে। বাজারে এমন কিছু জাত পাওয়া যায় যেগুলো কোকড়ানো রোগ প্রতিরোধী।
ভাইরাস মুক্ত বীজ ব্যবহার:
- রোগমুক্ত ও উন্নতমানের বীজ ব্যবহার করা উচিত। বীজ থেকে এ রোগ ছড়ায় না, তবে ভাইরাসমুক্ত বীজ দিয়ে চাষাবাদ করলে ঝুঁকি অনেক কমে যায়।
সঠিক সার প্রয়োগ:
- পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই সঠিক পরিমাণে সার ব্যবহার করা প্রয়োজন।
উপসংহার:
মরিচের পাতা কোকড়ানো রোগ একটি মারাত্মক সমস্যা হলেও সঠিক প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই রোগ থেকে ফসলকে রক্ষা করা সম্ভব। পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ এবং পরিষ্কার চাষাবাদ পদ্ধতি এ রোগ প্রতিরোধে মূল চাবিকাঠি।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url